মিথ্যে মামলায় রেহাই পাবে না পুলিশও সুপ্রিম বিধান





নয়াদিল্লি: বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা যাতে কোনওভাবেই প্রভাবিত না হয়, তার জন্য বরাবর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্র সরকারই হোক বা কোনও রাজ্য সরকার, বিচার ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখালেই ভৎর্সনার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। আর এবার সেই কঠোর অবস্থান বজায় রেখে শুক্রবার শীর্ষ আদালত বলেছে, মিথ্যা মামলা দায়ের বা প্রমাণ জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিচার করার জন্য পূর্ব অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। এপ্রসঙ্গে, শীর্ষ আদালত স্পষ্ট বলেছে, এই ধরনের কর্মকর্তারা দাবি করতে পারে না যে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭ ধারার অধীনে অনুমোদন ছাড়া তাদের বিচার করা যাবে না। বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের একটি বেঞ্চ জোর দিয়ে নির্দেশ এই দিয়েছেন। তারা বলেছেন, যে কোনও সরকারী কর্মচারীর দ্বারা ক্ষমতার অপব্যবহার বা অপব্যবহার প্রতিরক্ষামূলক হলে, তা শুধুমাত্র সরকারি ছাতার নীচে বলে ছাড় পাবে না, তার জন্যেও যথাযোগ্য শাস্তি পেতে হবে।

ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, 'যখ ন একজন পুলিশ আধিকারিককে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করার কথা বলা হয়, তখন তিনি দাবি করতে পারেন না যে ১৯৭ সিআরপিসি ধারার অধীনে বিচারের অনুমোদনের প্রয়োজন। কারণ এটি একটি সরকারী কর্মকর্তার সরকারী দায়িত্বের অংশ হতে পারে না। একটি জাল মামলা দায়ের করা বা প্রমাণ জাল করা বা একই সঙ্গে সম্পর্কিত নথি জাল করার কাজের ক্ষেত্রে কোনও পুলিশ আধিকারিক জড়িয়ে থাকলে, শুধুমাত্র সরকারি আধিকারিক বলে ছাড় পেতে পারেন না। সেক্ষেত্রেও সেই অফিসারও সমান ভাবে আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হবেন।' এদিন মূলত, মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। পূর্ব অনুমতি না থাকার কারণে একটি হত্যা মামলায় অভিযুক্তকে রক্ষা করার জন্য, নথি জাল করার জন্য, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বাতিল করেছিল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট। এদিন সেই রায়কেই কার্যত বাতিল করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। আদালত তার আদেশে বলেছে, 'কোনও সরকারী কর্মচারীর দ্বারা ক্ষমতার অপব্যবহার বা এমন কিছু করা হলে তা অবশ্যই আইন বিরোধী। হুমকি দেওয়া, একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করা, মিথ্যা নথি তৈরি করার জন্য একটি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে জড়িত আসামিকে যদি আটক করা যায়; তাহলে এই একই কাজ করার জন্যে পুলিশের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এই ধরনের হুমকিদাতা ব্যক্তিরা ১৯৭ সিআরপিসি ধারার প্রতিরক্ষামূলক ছাতার অধীনে পড়তে পারে না।' দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং সিআরপিসি-এর অধীনে, সরকারী কর্মচারীকে তাদের কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে সম্পাদিত ক্রিয়াকলাপের জন্য বিচার করার আগে যথাযথ সরকারী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি অনুমোদন প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছে যে একটি জাল মামলা দায়ের করা এবং এর সাথে সম্পর্কিত প্রমাণ বা নথি জাল করা কোনও সরকারী কর্মকর্তার সরকারী দায়িত্বের অংশ হতে পারে না। স্বাভাবিক ভাবেই শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণের পর দোষী পুলিশ আধিকারিকরাও, আর পাবে না কোনও বিশেষ সুবিধা।








Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url