আসাম মুখ্যমন্ত্রীকে ঘৃণা ও বিভাজন ছড়ানোর জন্য পদত্যাগ করতে হবে
আসাম মুখ্যমন্ত্রীকে ঘৃণা ও বিভাজন ছড়ানোর জন্য পদত্যাগ করতে হবে : ইয়াসমিন ফারুকী
সোস্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়ার জাতীয় সাধারণ সম্পাদিকা ইয়াসমিন ফারুকি দাবি করেছেন যে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি অভিযোগ করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর বিভাজনমূলক ও বিপজ্জনক নীতিগুলি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সংবিধানিক মূল্যবোধকে নষ্ট করছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ আগস্ট ২০২৫ থেকে শুধুমাত্র "মূলনিবাসী " বাসিন্দাদের জন্য অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান শুরু হবে—এবং তার সেইসঙ্গে “বিস্ফোরক পরিস্থিতির” হুঁশিয়ারি—এই সবই শান্তি ও গণতন্ত্রের জন্য বড় ধরনের হুমকি।
শর্মার নীতিগুলি যেমন বাছাইভিত্তিক অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান ও উচ্ছেদ অভিযান, সেগুলি মূলত বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে—যা অত্যন্ত বৈষম্যমূলক এবং ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান। ২০২১ সালের গোরুখুটি এবং ২০২৫ সালের ধুবড়ি ও গোলপাড়া জেলার উচ্ছেদ অভিযানে হাজার হাজার মানুষ—অনেকেই বৈধ জমির দলিল থাকা সত্ত্বেও—ঘরছাড়া হয়েছেন, এবং এই অভিযানে রাজ্য পুলিশি হিংসা ও সাধারণ মানুষের মৃত্যুও ঘটেছে।
বাংলাভাষী মুসলিমদের "অনুপ্রবেশকারী" ও "সন্দেহভাজন বাংলাদেশি" বলে চিহ্নিত করার যে প্রবণতা মুখ্যমন্ত্রী বারবার দেখিয়েছেন, তা একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পরিকল্পিতভাবে কোণঠাসা ও অপমান করার কৌশল হিসেবেই দেখা যায়।
তার শাসনকাল ঘৃণামূলক উক্তি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতায় পূর্ণ। কংগ্রেসকে “গরু” বলার মতো অবমাননাকর মন্তব্য, মিয়া মুসলিম সম্প্রদায়কে উপহাস করা, এবং "হুসেইন ওবামা" নিয়ে করা মন্তব্যগুলি দেশজুড়ে সমালোচিত হয়েছে—যা ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানোর উদাহরণ। বহু বছর ক্ষমতায় থেকেও মুখ্যমন্ত্রী আসাম চুক্তির ধারা ৬ বাস্তবায়ন করেননি এবং ভূমি-সংক্রান্ত হরিচরণ ব্রহ্ম কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করেছেন—যেটি প্রমাণ করে যে তার 'মূলনিবাসীদের সুরক্ষা’ সংক্রান্ত বিভিন্ন বক্তব্য অন্তঃসারশূন্য।
এছাড়াও, বিরোধীদলগুলির তরফে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যেসব দুর্নীতি ও জমি দখলের অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলিও অবিলম্বে তদন্তের দাবি রাখে।
SDPI-এর দাবি, হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অব্যাহত উপস্থিতি আসামের ঐক্য, শান্তি ও গণতান্ত্রিক আদর্শের জন্য একটি বিপদ। আমরা তার অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করছি। সমস্ত উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে স্বাধীন ও আদালত-নিয়ন্ত্রিত তদন্ত শুরু করতে হবে। প্রস্তাবিত অস্ত্র লাইসেন্স প্রকল্প বাতিল করতে হবে, যাতে রাজ্যের ক্রমবর্ধমান মেরুকরণকে ঠেকানো যায়। উচ্ছেদের শিকার পরিবারদের অবিলম্বে পুনর্বাসন, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং আইন অনুযায়ী জমি ফিরিয়ে দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
ইয়াসমিন ফারুকী
জাতীয় সাধারণ সম্পাদিকা
এসডিপিআই