মানুষ মিশেছে মানুষের সঙ্গে , উন্মাদনা সৃষ্টিকারীরা হেরে গেছে
মানুষ মিশেছে মানুষের সঙ্গে , উন্মাদনা সৃষ্টিকারীরা হেরে গেছে :সাদউদ্দীন
২০২৫ সালের ঈদ যেন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মানুষ মিশেছে মানুষের সঙ্গে । সেখানে সবকিছু উর্দ্ধে রেখে মানুষ ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছে। আমি খোদ কলকাতার মধ্যেই দেখলাম বেশ কয়েকটি জায়গায় যেখানে মুসলিমরা ঈদের নামাজ পড়তে এসেছেন, সেখানে অমুসলিমরা ফুল ছড়িয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এ শুধু রাজস্হানেই হয়নি, এই পশ্চিমবঙ্গেও আরো বেশি হয়েছে। কলকাতার পার্কসার্কাস এলাকায় দেখলাম, গড়িয়াহাট, গোলপার্ক , বালিগঞ্জ থেকে হিন্দু পরিবারের লোকজন এসেছেন মুসলিম বাড়িতে ঈদ মোবারক জানাতে। এনেছেন কত উপহার সামগ্রী । এসেছেন সল্টলেক বা রাজারহাট নিউটাউন থেকে। মুর্শিদাবাদের গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিলাম, সেখান থেকেও জানতে পারলাম মানুষ সব কিছু ভুলে ঈদের আনন্দ করেছেন। জানিয়েছেন ফুলেল শুভেচ্ছা। রাজধানী কলকাতা থেকে পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র ছিল যেন এক ঐক্য-সংহতি আর সম্প্রীতির বাতাবরণ।
দক্ষিণ কলকাতার শহরতলির গড়িয়ার কাছে কন্দর্পপুর। তার পাশেই কুসুম্বা। সেই কুসুম্বাতে থাকেন মিরাজ আজাদ। তার বাড়িতে ভাড়া থাকেন এক হিন্দু পরিবার। দেখলাম বাড়িতে কী মিলেমিশে ঈদ তারা করলো। একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল।
যে মুর্শিদাবাদে বেলডাঙা, শক্তিপুর, সারগাছি, নিমতিতা হয়, সেখানেও কোনো গণ্ডগোল নেই। মুর্শিদাবাদের বিড়ি সহ যত ব্যবসায়ী রয়েছেন তারা তো পুজো ও ঈদ উপলক্ষে বড়মাপের দান-ধ্যান করেন যারা কোনোদিন জাত বিচার করেন না। লালগোলাতে এক হিন্দু বাঙালির মেয়ের বিয়েতে ভূমিকা পালন তায়েদুল বা সাহাবুদ্দিন ভাইরা। তাহলে রাজনৈতিক ভাবে দুই শাসক আমাদের রাজ্যে মালদার মোথাবাড়ির অঘটন ঘটায়? এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।
রাজনৈতিক উস্কানি থাকে বলেই তো আমাদের রাজ্যে ধুলাগড়, আসানসোল, শিবপুর, নৈহাটি, তেলেনিপাড়া, মেটিয়াবুরুজের মুদিয়ালির,মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা, ঝাউবোনা, সারগাছি, বহরমপুর, নিমতিতা, জঙ্গিপুর বা মালদার মোথাবাড়ির মতো ঘটনা ঘটে। দুই শাসকের উস্কানিতে এই ঘটনাগুলো ঘটে। ৩১ মার্চ ঈদের দিনে মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে মানুষই শেষ কথা। 'মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান'। মানুষ প্রমাণ করেছে, 'সবার উপর মানুষ সত্য , তাহার উপরে কেহ নাই'। মানুষের জয় এইভাবেই হয়।