চাঁদা তুলে বেহাল রাস্তার সংস্কার করলেন গ্রামবাসীর।
চাঁদা তুলে বেহাল রাস্তার সংস্কার করলেন গ্রামবাসীর।
সরকারি অনীহা আর জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ হয়ে চাঁদা তুলে নিজেরাই রাস্তা সংস্কারের কাজে নামলেন গ্রামবাসীরা। মালদা জেলার কালিয়াচক-৩ ব্লকের পার দেওনাপুর শোভাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশি মোড়ল পাড়া গ্রামের এই মানবিক উদ্যোগ এখন প্রশংসার কেন্দ্রবিন্দু।
এই গ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ৫০ মিটার রাস্তা, যা পার দেওনাপুর, দেওনাপুর এলাকার মানুষজনের জন্য ধুলিয়ান ফেরিঘাট, অঞ্চল অফিস, ও পার দেওনাপুর হাই মাদ্রাসা যাওয়ার একমাত্র রাস্তা, সেটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় ছিল। ভারী বর্ষার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। কাদা-পানিতে ভরা এই রাস্তায় যাতায়াত করতে নিত্যদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে সাধারণ পথচারীরা।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহুবার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধানকে রাস্তা সংস্কারের জন্য বলা হলেও কোনও স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রায় এক মাস আগে কিছুটা বালি ফেলা হলেও, লাগাতার বৃষ্টিতে সেই উদ্যোগও ব্যর্থ হয়।
অবশেষে গ্রামবাসীরাই এগিয়ে আসেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা তুলে নিজেরাই রাস্তার সংস্কার কাজে হাত লাগান। ইট সোলিং ও ডাস্ট ফেলে রাস্তাটি মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে তোলেন তাঁরা।
এই উদ্যোগে অংশ নেওয়া বাসিন্দা মুকুল শেখ জানান, “প্রতিদিন এই রাস্তায় স্কুল পড়ুয়া ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে। সরকার বা পঞ্চায়েত যখন কিছু করছে না, তখন নিজেদের প্রয়োজনে আমরাই উদ্যোগ নিয়েছি।”
এলাকার এক গৃহবধূ সুলতানা বিবি বলেন, “বর্ষায় কাদায় পা ডুবিয়ে বাজার যেতেই পারতাম না। আজ রাস্তা ঠিক হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছি। এই কাজটা সরকার করার কথা ছিল, আমরা করলাম।”
স্থানীয় পথচারীরাও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, এই রাস্তায় এতদিন চলা দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। এখন অন্তত স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা যাচ্ছে।
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, জনদুর্ভোগে সরকার যখন চুপ, তখন একতা ও সচেতনতা থাকলে সাধারণ মানুষের উদ্যোগেই অনেক কিছু সম্ভব।