ভোটার আইডি ও রেশন কার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানালো এসডিপিআই
বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনে আধার, ভোটার আইডি ও রেশন কার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানালো এসডিপিআই
সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া ২১ জুলাই, ২০২৫ নির্বাচন কমিশনের দ্বারা সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা পাল্টা হলফনামার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। উক্ত হলফনামায় বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন(SIR) প্রক্রিয়ায় আধার, ভোটার আইডি (EPIC), ও রেশন কার্ডকে স্বতন্ত্র প্রমাণপত্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে। SDPI-র জাতীয় সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শফি এই সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই পদক্ষেপ বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বহু বৈধ ভোটারকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার আশঙ্কা তৈরি করছে, বিশেষ করে আসন্ন নভেম্বর ২০২৫-এর বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট ১১টি নথির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার নির্দেশ—যেমন পাসপোর্ট, জন্মসনদ, মাধ্যমিক সার্টিফিকেট ইত্যাদি—বিহারের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা উপেক্ষা করছে। বিহারে মাত্র ২.৫% মানুষের পাসপোর্ট আছে এবং মাধ্যমিক পাশ করেছেন এমন ব্যক্তির সংখ্যা ১৫%-এরও কম। ফলে এই নথিগুলি দরিদ্র, তফসিলি জাতি/উপজাতি (SC/ST) এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের পক্ষে জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব। অপরদিকে, আধার কার্ড বিহারের ৭.৮৯ কোটি ভোটারের মধ্যে ৯০%-এর বেশি মানুষের কাছে আছে এবং রেশন কার্ড দরিদ্র জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সরকারি নথি। এগুলিকে স্বতন্ত্র প্রমাণপত্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া, যদিও সুপ্রিম কোর্ট ১০ জুলাই, ২০২৫ তারিখে এগুলিকে বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল, তা স্বেচ্ছাচারী ও ভারতের সংবিধানের ৩২৬ নম্বর অনুচ্ছেদে স্বীকৃত ভোটাধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে।
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য—আধার বা রেশন কার্ড নির্ভরযোগ্য নয় কারণ কিছু অনাগরিক আধার পেয়েছেন এবং ৫ কোটিরও বেশি ভুয়ো রেশন কার্ড রয়েছে—সরকারের অন্যান্য ক্ষেত্রেও এসব নথির গ্রহণযোগ্যতা উপেক্ষা করছে। কমিশনের দাবী যে উল্লিখিত ১১টি নথির তালিকা "ইঙ্গিতমাত্র", বাস্তবে সে বিষয়ে নির্বাচনী রেজিস্ট্রেশন অফিসারদের উপর নির্ভর করতে হয়, যা পক্ষপাত বা অনির্দিষ্টতার ঝুঁকি বাড়ায়।
এই বিশেষ সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়ার ৩০ দিনের সময়সীমা (২৫ জুন–২৬ জুলাই, ২০২৫) বিহারের বিপুল ভোটার সংখ্যার প্রেক্ষিতে একেবারেই অপ্রতুল। এর ফলে মুসলিম, দলিত, ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কা প্রবল।
আমরা সুপ্রিম কোর্টের সেই উদ্বেগের সাথে সহমত পোষণ করছি যে নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়; সেটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এখতিয়ারভুক্ত। নির্বাচনের ঠিক আগে এই প্রকার নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিরোধী ভোটারদের দমন করার ষড়যন্ত্র বলেই মনে হচ্ছে।
মোহাম্মদ শাফি
জাতীয় সহ সভাপতি
এসডিপিআই